Search


কিছু কিছু মুভি আছে যেগুলো দেখার পরও তার আবেদন কোনো অংশে ফুরায় না। Scent of a Woman ঠিক সেই ধরণের বিরল মুভিগুলোর একটা। মুভিটা দেখার পর স্তব্ধ হয়ে ভাবছিলাম, একটা মুভি কিভাবে এতটা হৃদয়গ্রাহী হয়! কোন রক্ত মাংশের মানুষের পক্ষে কিভাবে সম্ভব এতটা নিখুঁতভাবে নিজের চরিত্রকে রুপালি পর্দায় ফুটিয়ে তোলা! আমার মনে হচ্ছিলো যে জীবনে আমার আর কোন মুভি দেখা হয় নাই! আর কোন মুভি জীবনে না দেখলেও ক্ষতি নাই!

মুভিটার নাম ভুমিকায় অভিনয় করেছেন Al Pacino ।ভদ্রলোকের অনেক মুভি দেখেছি আগে। কিন্তু বাজী ধরে বলতে পারি এই মুভিটা না দেখে যদি বলতাম "আমি আল পাচিনোর মুভি দেখেছি - তার অভিনয় আমার অনেক ভালো লাগে, তিনি একজন ওস্তাদ অভিনেতা" সেটা হতো মিথ্যা বলা! এই মুভিটা না দেখলে অভিনেতা আল পাচিনো কে চেনা যাবে না। জানা যাবে না কতো বড় মাপের অভিনেতা তিনি। স্যালুট টু আল পাচিনো! উল্লেখ্য, এই মুভিতে অভিনয় করে তিনি অস্কার পেয়েছিলেন।

পাঠক, বিশ্বাস করুণ, উপরের প্যারা দুটি দিয়ে আমি আমার মুগ্ধতার কিয়দংশ মাত্র প্রকাশ করেছি।আমি নগণ্য ব্লগার, কতোটুকুই বা আমার প্রকাশ ক্ষমতা! আমি আমার সীমিত লেখনিতেই প্রকাশ করলাম আমার ভালোবাসা। শুধু একটা কথাই বলতে পারি, এই মুভিটা দেখার পর এখন থেকে আল পাচিনো আমার চোখে অল টাইম বেস্ট। জানিনা কোনো দিন এই ধারণা পালটে দেয়ার মত আর কোনো অভিনেতা আসবেন কি না!

এবার নজর দেয়া যাক মুভির দিকে। লেফটেন্যান্ট কর্নেল ফ্র্যাঙ্ক স্লেড (আল পাচিনো) একজন রিটায়ার্ড আর্মি অফিসার। অন্ধ, আত্যন্ত বিদ্ঘুটে মেজাজ। দুনিয়ার সব কিছুর উপর রেগে থাকা, বেঁচে থেকেও জীবনের উপর বীতশ্রদ্ধ এক হতভাগ্য ব্যাক্তি। জীবন একসময় তাকে সব দিয়েছিলো। কালের প্রবাহে আজ তিনি অন্ধ। একসময়ের পরাক্রমশালী আর্মি আফিসারের চোখে জীবন এখন শুধুই বোঝা মাত্র!

অন্যদিকে চার্লি সিমস (ক্রিস ও' ডোনেল) একটা স্বনামধন্য প্রিপারেটরী স্কুলের ছাত্র। তার আশে পাশের সবাই বিশাল অর্থবান পিতার সন্তান। কিন্তু সে আলাদা। সে এই স্কুলে পড়তে এসেছে স্কলারশিপ নিয়ে। বাবা মা থাকেন বহু দূরে, অরিগনে (USA) একটা কনভিনিয়েন্স স্টোর চালান তারা।
চার্লি বড়দিন উপলক্ষে বাড়ি যাবে, কিন্তু বিমান ভাড়া নেই যে! কি আর করা পার্ট টাইম জব হিসাবে যোগ দিলো কর্ণেল এর সাহায্যকারী হিসেবে। উদ্দেশ্য বিমান ভাড়ার টাকা জমিয়ে বাড়ি যাবে বড়দিনের ছুটি কাটাতে!

কিন্তু কাজ পুরোদমে শুরু করার আগেই স্কুলের কিছু বখাটে ছেলের দুষ্কর্মের সাক্ষী হয়ে ফেঁসে গেলো সে। আল্টিমেটাম দেয়া হলো তাকে - হয় ধরিয়ে দাও অপরাধীদের, নয়ত শেষ তোমার ভবিষ্যৎ! কাজে এসে খেল আরো বড় ধাক্কা! কর্ণেল যে শুধু বদরাগী তাই না, বরং তার আছে বিশাল এক প্ল্যান - জীবনটাকে শেষবারের মতো উপভোগ করতে চান তিনি। তাই তাকে যেতে হবে নিউ ইয়র্ক!

একদিকে স্কুলের ঝামেলা, অন্যদিকে কর্ণেলের খেয়ালীপনা - চার্লি সম্ভবত পেতে যাচ্ছে তার জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্তগুলো!

প্রিয় পাঠক, আমার মতো নগন্য ব্লগারের পক্ষে রিভিউ লিখে এই মুভির আবেদন বুঝানো সম্ভব নয়। আমার সীমিত ক্ষমতায় যা কুলায় তাই লিখলাম। শুধু এটুকুই বলার আছে - এই মুভিটা না দেখলে আপনার মুভি দেখার ঝুলি থেকে যাবে অনেকটাই অসম্পূর্ণ।

IMDB রেটিং : 7.8/10
আমার রেটিং : 9.5/10

@@@ Md. Nazmush Shakib @@@

0 মন্তব্য(সমূহ):

Post a Comment