Search

কোলকাতার ফিল্ম বরাবরই একটু ভারি ভারি হয়। বিশেষ করে আর্ট ফিল্মগুলো বেশ প্রশংসনিয়। আমি তুমি আর ন্যাকামির যুগ কোলকাতার শুরুতেও ছিলনা এখনও নেই। মাঝে কিছুদিন এসেছিল । আর অঙ্কের এই পর্যায়ে কোলকাতার ফিল্মগুলো বেশ দেখা হয়। এই ফিল্মটা ডাউনলোড করা ছিল কিন্তু দেখা হয় নাই। আজ দেখে ফেললাম। রিভিউ লেখার কোনো ইচ্ছা ছিলনা কিন্তু এক ফেসবুক বন্ধুর জন্য লেখা।

মুভিটি পরিচালনা করেছেন অঞ্জন দত্ত। তার কথায় পরে আসছি। অভিনয় করেছেন পরমব্রত,রুদ্রনীল এবং শাশ্বত চক্রবতী । পরমব্রত এবং রুদ্রনীল দুজনেই টলিঊডের বেশ ঝুনা প্লেয়ার। সেরা ১০ এর নাম বললে ওদের প্রথম দ্বৃতীয় স্থানে রাখার চেষ্টা করবো।



যদি সেরকমের উল্লেখ করার মত ফিল্ম ওদের ব্যানারে নেই তবুও ওদের অভিনয়ে নিমিষে প্রশংসার দাবিদার। টানটান চোখের চাহনি এবং ভেঙ্গে ভেঙ্গে পরমব্রতের স্পষ্টভাষী কথাগুলো শুনতে বেশ ভালো লাগছিল। রুদ্রনীলের অভিনয়েও ছিল বেশ প্রাঞ্জলতা।


যাই হোক কাহিনিতে আসা যাকঃ এটা মুলত চার বন্ধুর কাহিনি। হরি,শেখর,সঞ্জয়,অসীম। তাদের স্কুল লাইফ থেকে সম্পর্ক। এদের ভিতরে শুধুমাত্র অসীম উপার্জনকারী। বাকিরা সবাই বেকার। তার পেশা ডাক্তারি। 
আর এভাবে থাকতে থাকতে বন্ধুদের বিরক্তি যখন চরমমাত্রায় তারা তাদের ভবিষতের কথা চিন্তা করে একটা বাংলা ব্যান্ড খুলে ফেললো। প্রথম কন্সাটেই নর্থ বাংলায় তারা দর্শকের সম্মুখে অপমানিত হয়ে সীধান্ত নিল যে তারা আর গান গাবেনা।

এর পরে তারা সীদ্ধান্ত নিয়ে একটা ট্রাভেল এজেন্সি খুলে ফেললো। শুরু করে নিল তাদের প্রথম যাত্রা। প্রথমত ৯ জন যাত্রি নিয়ে তারা রহনা দিল দার্জিলিং এর উদ্দেশ্যে। রাস্তায় একটা মেয়ের দেখা পেল এবং সেও এদের দলে ভিড়ে গেল। 

কাহিনির শুরু এখান থেকেই। মজাও এখানে । স্ক্রিপ্ট খুব হালকা হলেও ফিল্মের গতী অসাধারন। এখানে ১০ টা যাত্রি ১০ রকমের এবং ওরা ৪ বন্ধুও চার রকমের। ফলে যা হয় আর কি।
এখানে বিভিন্নরকমের ইন্টারটেইন্টমেন্ট রয়েছে, মুভি গতি বাড়িয়েছে এর টানা টানা সংলাপ। এরকমের সংলাপ সচরাচর দেখা যায় না। কেউ একটু বেশি জ্ঞানী আবার কেউ সরকারি মাল, কেউ বা সায়েন্সের। সব মিলিয়ে এ ঝালমুড়িটার একটা বিশেষ বহিপ্রকাশ হলো Chalo Let's Go । ফিল্মের একটা স্থানে সবাই কাম্প ফায়ার করে আড্ডা দেয়, এরকমের আনন্দদায়ক আড্ডা, তার উপরে ফিল্মে তাই ফুটিয়ে তোলা। সত্যি অসাধারন।


এতক্ষন যা বললাম তা হলো সাধারন চোখে মুভিটিতে কি দেখা যাবে তাই। এবার একটু ভিতরে ঢুকি। এটা পরিচালনা করেছেন অঞ্জন দত্ত। আর অঞ্জন দত্ত মানেই জীবন মুখি। অঞ্জনকে কে না চেনে। কে শোনেনি অঞ্জনের গান। অঞ্জন সারা জীবন তার গানের মাঝে মা্নুষকে বাচার সপ্ন দেখিয়েছেন। অঞ্জন খুজে ফিরেছেন জীবনের খুটিনাটি ব্যাপারগুলো। অঞ্জন বলেছেন না বলা কথাগুলো। হাসতে হাসতে গানের ভাষায় আঘাত করেছেন সমাজের নিয়মাবলি, ও চরম বাস্তবতাকে। অঞ্জন সার্থক।

গান ফেলে অঞ্জন আখড়ে ধরেছে সিনেমা। সেখানেও সে তার চরিত্রের প্রকাশ দেখিয়ে দিচ্ছে। এখানেও সে খুজে ফিরছে সুমনকে। এখানে খুজে যাচ্ছে রঞ্জনা এবং বেলাকে। পাড়িয়ে যাচ্ছে ক্যালসিয়ামের দুপুর বেলার ছাদের আকশ দেখা ছেলেটাকে।

Chalo Let's Go দিয়ে অঞ্জন সেরকমের কিছু বাস্তবতাকে তুলে ধরেছেন। ঘুরতে ঘুরতে তিনি দেখিয়ে দিয়েছেন অনেক কিছু। হাসি ঠাট্টার ভিতরে একটা কষ্টের করুন সেতার বাজিয়েছেন। আর সেটাই দেখে নিবেন মুভিতে।

 

এবার আসি মুভির গানে। অঞ্জন মানেই সেরকমের গান। গাঙ্গুলো অসাধারন হয়েছেন। রুপম,রুপংকর গেয়েছেন। ওদের ২ জনকে আমার বেশ ভালো লাগে। একটা অঞ্জন নিজেই গেয়েছেন। টাইটেল গানটা। এ গানোটা আবার উত্তম কুমার একটা গান থেকে ২ লাইন ধার করা। উপরে আছে দেখে নিন।



Personal Rating: 8.০

Personal Grade : A+

Personal Quote : হারিয়ে খোজা জীবনের মানে।






এই পোষ্টটি ফেসবুক বন্ধু মালিহা কে উতসর্গ করা হলো।




2 মন্তব্য(সমূহ):

Anonymous said...

ধন্যবাদ বন্ধু, নিজেকে ভাগ্যবতী বলে মনে হচ্ছে, আর রিভিউটা খুব ভালো লেগেছে। আশা করি সামনে আরোও এমন কিছু রিভিউ পাবো। maliha

Dip said...

ধন্যবাদ মালিহা। আমি আমার অবসরের ৯০% টাইম তোমাদের দেই। তাই আর দশটা মানুষের থেকে তোমাদের সাথে মেলামেশা বেশি। এককথায় তোমাদের জন্যি আমি।

তোমার যদি অন্য কোনো মুভি রিভিউ এর দরকার হয় তাহলে আমাকে জানাবে। মুভিটি আমার দেখা থাকলে আমি রিভিউ দিয়ে দিব।

আর না দেখা থাকলে ৩-৪ দিন অপেক্ষা করতে হবে।

আবারো ধন্যবাদ।

Post a Comment