অনেক
হলো সমালোচনা। এবার ক্ষ্যান্ত দিব তাহলে। যারা ভাবে তারা ভাবতেই থাকে। ভাবনার শেষ
নেই। ভেবে কাজ করাটাই আমার উদ্দেশ্য। বাংলা ফিল্ম কেন আমাদের মন মত হচ্ছেনা ?
কি করলে এর শেষ মিলবে। আসুন সমাপ্তি বের করি, বন্ধ করি বাজে সমালোচনা।
কবিগুরু বলেছেন, উপদেশ দেওয়া
সহজ, কঠিন হলো উপায় বের করা।
অডিয়েন্স
কি চায় ?
বাংলা
ফিল্মে
তা আছে কিনা ?
থাকলে
কতটুকু ?
কিভাবে
আনা যেতে পারে ?
আমরা
কি আনতে বাধ্য করতে পারিনা ?
অডিয়েন্স
কি চায় ?
যত ভালো সিনেমা আপনি বানান না কেন, সর্বদা আপনাকে যেটা মাথায় রাখতে হবে সে হলো পাবলিক। যদিও আমি ওইসব আবাল পাবলিক পছন্দ করিনা যারা বাংলাফিল্মের ডাউনলোড লিঙ্ক খুজে আর বাংলা মিডিয়াকে গালাগালি করে। আবাল তারাই যারা বাংলা ফিল্ম না দেখে, আন্দাজের উপরে, কিছুটা মুখে মুখে শুনে, নিজেকে প্রচুর মেধাবী ভেবে, পোষ্টার দেখে, এবং অবশ্যি মনের মাধুরি মিশিয়ে বাংলা ফিল্মের সমালোচনা করে থাকে। সেক্ষেত্রে আবালগুলোকে বাদ দিয়ে যেসব মানুষ ফিল্ম দেখে তাদের আমরা অডিয়েন্স হিসেবে আক্ষায়িত করে আলোচনা করি।
ইদানিং বন্ধুসহ হলে গিয়ে সিনেমা দেখলাম। ইংলিশ,বাংলা, কোলকাতার মুভি, সকল ধারাই দেখলাম। গোটা দশেক বন্ধু নিয়ে সমপরিমান বাংলা নাটক দেখলাম।
আমার দৃষ্টিকোন থেকে
অডিয়েন্স-এর টপ ১০ চাহিদা দিলাম।
১। একটা সুন্দর চেহারার নায়িকা।
২।
পরিপুর্ন কমেডি এবং রোমাঞ্চ।
৩।
অসাধারন মেলোডি ও সাড গান।
৪।
একটা ভিন্নধারার গল্প।
৫।
সুপুরুষ।সুন্দর হাসি এবং লম্বা নায়কের প্রাধন্য বাংলাতে বেশী।
৬।
খুব কমন কিন্তু গভীরের দৃশ্য।
৭।
টানটান সংলাপ
৮।
আবেগ। অশ্রু ঝরাতেই হবে।
৯।
অসমতা,ব্যার্থতা,এবং তা থেকে বের হয়ে আসার কৌশল
১০।
এমন বিষয় নিয়ে আলোচনা যা ৯০ % মানুষের কাছে কমন। যেমনঃ প্রেম,
মোটামুটি
এরকমের ১৩১ টা পয়েন্ট আমি নোট করেছি। এই জিনিষগুলো আমি বেশি দেখেছি।
এবার একটু নিচের দিকে নেমে দেখি, বেশ বড়সড় একটা জনতা জুড়েই সেরা ৫ টা জিনিষ। যদিও এগুলো সব ফিল্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না।
এবার একটু নিচের দিকে নেমে দেখি, বেশ বড়সড় একটা জনতা জুড়েই সেরা ৫ টা জিনিষ। যদিও এগুলো সব ফিল্মের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য না।
১।
সাকিব খান ও অপু বিশ্বাস
২।
একটি ধর্ষন দৃশ্য।
৩।
যেকোন একটা দৃশে যে কাউকে বেশ হিংস্র হিসেবে প্রকাশ করা
৪।
সততাকে উল্লেখযোগ্য করে দেখানো।
৫।
অশ্লীন গান
যাই
হোক,
এই হলো বাংলাদেশি, সকল প্রকার
মুভিখোরদের চাহিদা। যদিও ১ মাসের অভিজ্ঞতায় বলছি। সামনে এব্যাপারে আরোও আলোচনা
করতে পারবো।
বাংলা
ফিল্মে তা আছে কিনা ?
আগে
প্রচুর বাংলা ফিল্ম দেখা হয়েছে। নতুন গোটা ৫০ দেখার পর যা বুঝলাম।
১। একটা সুন্দর চেহারার নায়িকা।
১। একটা সুন্দর চেহারার নায়িকা।
==> সময় ফিরছে। লাক্সেরগুলো মাঠে নামছে। ন্যাকামিটা বাদ দিলে দাঁড়িয়ে যাবে।
ফারুরিকে ছেড়ে তৃষা আরও কিছু কাজ বাড়াতে পারে। পুরোনোদের ভিতরে পুর্নিমা এখনো
নিয়মিত, বাজারও তার পক্ষে আছে। শাবনুর আর মৌসুমীর সাস্থের
দিকে খেয়াল দেওয়া উচিত। অপুর সময় আর থাকবেনা।
২। পরিপুর্ন কমেডি এবং রোমাঞ্চ।
২। পরিপুর্ন কমেডি এবং রোমাঞ্চ।
==> দিলদারের গতের পর থেকে আর আসেনি। কিন্তু আনতে হবে। দারুচিনি দ্বিপ এই
জন্য অডিয়েন্স গ্রহন করেছে। কোলকাতার দেবের মুভি দেখলেই বোঝা যায়। কমেডিও রোমাঞ্চ
কতটা পছন্দ, অডিয়েন্সের। বাংলা নাটকে হচ্ছে, বুদ্ধিদিপ্ততার সাথে এসব জিনিষ ফিল্মে নিয়ে আসতে হবে।
৩। অসাধারন মেলোডি ও সাড গান।
৩। অসাধারন মেলোডি ও সাড গান।
==> প্রজাপতি সিনেমা হলে যেকদিন চলেছে, তা হাবিবের
ডুবের জন্য। ফারুকির থার্ড পারসনও হাবিবের দ্বিধার জন্য। আর যাও পাখি ও নিথুয়া
পাথারের জন্য মনপুরা। হৃদয় খানের চাইনা মেয়ে ব্যবহার করার জন্য প্রিয়া আমার প্রিয়া
সুপার হিট। কি যাদু করেছ বলনা মেলোডি গানটার জন্যও সিনেমা হিট। গান আছে, কিন্তু আরও প্রভাব বিস্তার করতে হবে।
৪।
একটা ভিন্নধারার গল্প।
==> এটা বিশেষ করে বলার কিছু নেই। রিক্সেওয়ালা থেকে যারা আই এম ডি বিতে লিষ্ট
করে তারাও এই জিনিষটার প্রতি দুর্বল। এটা খুব দরকার।
৫। খুব কমন কিন্তু গভীরের দৃশ্য।
==> গানের ক্ষেত্রে দেশের কমন জায়গাগুলো একটু বিশেষ করে দেখানো, যেখানে চাইলেই যেতে পারে। এবং পছন্দের স্থান যেমন, সমুদ্র,নদী,কাশবন,বালুচর, ইটের ভাটা, শর্ষের
ক্ষেতে, কৃষঞ্চুড়ার নিচে, নার্সারিতে,
এগুলোর ব্যবহার বাড়াতে হবে।
৬।
টানটান সংলাপ।
==> খুব দেখেছি, বাবা-মা, প্রেমিক প্রেমিকা, ভিলেন নায়কের কনভারশেষনটা দর্শক
খুব মনযোগ সহকারে দেখে। ওখানে সংলাপের কিছু চেঞ্জ আনতে হবে।তাছাড়া নায়ক নায়িকার
হিংসে-হিংসি খেলাটা দর্শক আনন্দের সহিত গ্রহন করে। উত্তম সুচিত্রার মুভির কথাকাটি
থেকে শুরু দর্শক আজও তা চায়। কিন্তু সেটুকু চাহিদাও আমরা দিতে পারছিনা।
৭।
আবেগ। অশ্রু ঝরাতেই হবে।
===> বাংলার দর্শক শৌখিন দুক্ষ প্রিয়। কষ্টে তাকে থাকতেই হবে। তাই সিনেমার
চরিত্রের দুক্ষগুলোকে নিজের করে নিয়ে জল ঝরতে তারা বেশ পছন্দ করে। অঞ্জন চৌধুরির
ছোত বউ, মেজ বঊ, এই বঊ সিরিজটা
দেখেনি এমন বাংলা সংসারি মহিলা পাওয়া মুসকিল। যতবার চলবে তারা ততবার দেখবে। কারন
আমরা কাদতে ভালবাসি।কাজী হায়াতের কাবুলিওয়ালা। আর ছুটির ঘন্টা আমরা গ্রহন করেছি
সাদরে।
৮।
অসমতা,ব্যার্থতা,এবং তা থেকে বের হয়ে আসার কৌশল
===> কিছু উপায় বের করে দেওয়া। ধরেন ভিলেনের সাথে ঝগড়া। ওইখানে মারামারিটাই
বাংলা ফিল্মের মুখ্য। কিন্তু বুদ্ধি করে ভিলেনকে বোকা বানিয়ে বেচে আসাটা দর্শকের
মুখে একতা মৃদু হাসি এনে দেয়।
গবীর ধনী, প্রেমে ব্যর্থতা, প্রিয়জন মারা যাওয়া ইত্যাদি কমন জিনিষ থেকে বের হয়ে আসার একটা অভিনব উপায়।
৯। এবং বিষয় নিয়ে আলোচনা যা ৯০ % মানুষের কাছে কমন। যেমনঃ প্রেম,
গবীর ধনী, প্রেমে ব্যর্থতা, প্রিয়জন মারা যাওয়া ইত্যাদি কমন জিনিষ থেকে বের হয়ে আসার একটা অভিনব উপায়।
৯। এবং বিষয় নিয়ে আলোচনা যা ৯০ % মানুষের কাছে কমন। যেমনঃ প্রেম,
===> রবীন্দ্রনাথকে নিয়ে বানালেই হবেনা। কয়জন জানে ভাবতে হবে। এমন কিছু সেন্স
অফ হিউমার আপনার কাজে লাগাতে হবে যাতে দর্শেকের না ভেবেই ব্যাপারটা বুঝতে পারে।
যেমন একজন পুলিশ অফিসারকে আপনার পরিচয় করাতে হবে, তার
অফিসিয়াল ড্রেস পরিয়ে। এরকম কিছু জিনিষ রাখতেই হবে। সাস্পেন্স রক্ষার ক্ষেত্রে আলাদা।
১০।সিনেমার
পাবলিসিটি।
== সঙ্গিত
বাংলা টাইপ আমাদের একটা চ্যানেল দরকার। যেখানে সারাদিন ধুধু সিনেমা নিয়েই আড্ডা হবে।
বিজ্ঞাপন ছাড়া অডিয়েনশ টানা খুব কষ্টের।
১১।
সুদর্শন নায়ক, লম্বা ও সুন্দর হাসির প্রাধন্য
বেশি
==> বাংলাই মেয়েরা নিজে যাই হোক বিয়ের ক্ষেত্রে বা রুচির ক্ষেত্রে অস্মভব
বাচবিচার প্রিয়। সেই পিছুটান থেকেই খাট নায়কদের গ্রহন করতে চায়না। কষ্টে করে,
না পেরে। সুন্দর হাসিটা ছেলেরা নকল করে। প্রেয়সীকে শুনায়। আমার উত্তম
কুমারের মত হাসতে ইচ্ছে করে। রাজ্জাকের মত গ্যাবাইডিং এর প্যান্টের সাথে শোয়েটার
পরে, চা খেতে ইচ্ছে করে। শালমান শাহের মত ঘাড়ে গামছা দিতে
ইচ্ছে করে।
এই যে বিষয়গুলো উল্লেখ করলাম, এই জিনিষগুলো যে বাংলা ফিল্মে নেই তা না। আছে কিছু তাতে যত্নের ছাপ নেই, অপরিপক্কতা এবং আরও বেশ কিছু সমস্যার তা ফুটে উঠছে না। ৪৫ % লজিক বাংলা ফিল্ম ধারন করলেও বাকিটুকু করেনা। সেটা করাতে হবে।
এই যে বিষয়গুলো উল্লেখ করলাম, এই জিনিষগুলো যে বাংলা ফিল্মে নেই তা না। আছে কিছু তাতে যত্নের ছাপ নেই, অপরিপক্কতা এবং আরও বেশ কিছু সমস্যার তা ফুটে উঠছে না। ৪৫ % লজিক বাংলা ফিল্ম ধারন করলেও বাকিটুকু করেনা। সেটা করাতে হবে।
3 মন্তব্য(সমূহ):
দারুন এক পোস্ট পড়লাম দিপ। এই একই পোস্ট আমিও দিতাম, তবে এখন না, আরও পরে। কারণ এইসব ধরনের বিষয়গুলো আমিও চিহ্নিত করতে পারছি। সততা, দেশপ্রেম - এই দুইটা বিষয় এদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ন। যেভাবেই হোক বিষয়টাকে তারা তুলে ধরবেই।
আরেকটা ব্যাপার হল ডায়লগ। নায়ক ভিলেনের মাঝের সংলাপে দারুন অর্থপূর্ন কিছু ডায়লগ থাকবেই। আর স্লোগান ছাড়া যেন কোন ভিলেন ভিলেনই না। - সাম্প্রতিক সময়ের 'হেইইই - কারও হাত থাকবে না কারও পা থাকবে না ..' খুব ভাল্লাগছে :)
তোমার এই আন্ডারস্ট্যান্ডিং ভালোভাবে প্রয়োগ করতে এগিয়ে আসুক চলচ্চিত্রকাররা - সেই শুভকামনা :)
দারাশিকো ভাই, আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
শুধুমাত্র দেশপ্রেমের উপর ভিত্তি করে এত মুভি বোধহয় এদেশেই হয়েছে।
রোমান্টিক মুভিতেও দেশপ্রেম দেশপ্রেম একটা ভাব থাকে।
চোখ বুঝে একজন দেশ প্রেমিক ভাবতে বললে, কেন যেন মান্নার চেহারাটা ভেসে আসে।
ডায়লগটা কিন্তু খুব ছোয়াছে। দেখুন, আম পম গানা। এই সংলাপটা কিন্তু ব্যপক জনপ্রিয়। হ্যা !! তথাকথিতভাবে এটাকে পচানো হচ্ছে, কিন্তু মোষ্ট ওয়েককামের সাকসেসের ১% হলেও এই ডায়লগ নির্ভরশীল।
আপনি যেটা বললেন, ভালোবাসার রঙ- এই ডায়লগটা একদম পারফেক্ট।
অমিত হাসান ফাটাইয়া দিছে।
আপনার পোষ্টের অপেক্ষায় থাকলাম।
অনেকদিন আপনার ব্লগে যাওয়া হয়না।
আজ রাতে যাব,
যিনি Expect More প্রেস করেছেন, তাকে ধন্যবাদ। আমি আমার যথাসাধ্য চেষ্টা করবো, লেখা আরও উন্নত,তথ্য সমৃদ্ধ ও ভাষার আধুনিক ব্যবহার করতে। অনেক ক্ষেত্রে বিষয়টা মাথায় থাকলেও লেখনিতে তুলে আনা সম্ভব হয়না। সেটা আমার অপারগতা, সেজন্য আমি দুক্ষ প্রকাশ করছি। আপনারা আমার পাশে থাকুন, আমি উন্নত লেখা লিখব প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হলাম। আর বাংলা চলচিত্রের এমন একটা হাল যাচ্ছে এখন, ভার্চুয়াল গন মাধ্যমে প্রভাব বিস্তার করতে টুকটাক লেখাই যথেষ্ট। আমি সেটার চেষ্টাই করছি। আপাতত কিছুটা প্রভাবে ফেলতে সক্ষম হলে, বাকিটা নিজ থেকে এসে যাবে। আমি আমার ক্ষুদ্র প্র্য়াসে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে যাব
Post a Comment